সত্যবার্তা ডেস্ক :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ছত্রাজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় আটক হয়েছেন এক শিক্ষক। পরে স্থানীয়রা ওই শিক্ষক ও ছাত্রীকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। মঙ্গলবার রাতে ছাত্রীর চাচা বাদী হয়ে শিবগঞ্জ থানায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করেন। বুধবার তাকে আদালতে নেয়া হলে হলে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। অভিযুক্ত শিক্ষক গোলাম কবির (৪৫) ছত্রাজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা বিষয়ের শিক্ষক। তিনি ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের কাঠালিয়াপাড়ার মৃত তাজেমুল হকের ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দা, বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী, প্রত্যক্ষদর্শী, বিদ্যালয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক গোলাম কবির ও ওই ছাত্রীকে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ছত্রাজিতপুর উচ্চ বিদ্যলয়ে প্রবেশ করতে দেখে স্থানীয় কয়েকজন যুবক। পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রীকে স্থানীয়রা একটি কক্ষে দেখতে পায়। বিদ্যালয়ের শরীরচর্চা বিভাগের সরঞ্জাম রাখার কক্ষ থেকে তাদের আপত্তিকর অবস্থায় আটক করা হয়। পরে এর প্রতিবাদে স্কুলে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধ জনতা।
পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের দুইজনকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক সাবেক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা স্থানীয় কয়েকজন যুবক দীর্ঘ দিন ধরে তাদের অনুসরণ করছি। প্রায় সময়ই দেখতে পাই, স্কুল ছুটির পর বিকেলে তারা দুইজন স্কুলে প্রবেশ করে। শরীরচর্চা বিভাগের শিক্ষক গোলাম কবিরের কাছে বিদ্যালয়ের মূল ফটকসহ বিভিন্ন কক্ষের চাবি থাকায়, প্রবেশের পর বাইরের তালা দেওয়া হয়। যাতে মনে হয়, কেউ ভেতরে নেই। আজ সুযোগ মতো পেয়েছি বলে ধরতে সক্ষম হয়েছি।
ছত্রাজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাদিকুল ইসলাম বলেন, বিকেলে মোবাইলে জানতে পারি বিদ্যালয়ের একটি রুমে শিক্ষক গোলাম কবির ও এক ছাত্রীকে আটক করা হয়েছে। পরে এসে সবার সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় পুলিশের হাতে তাদের তুলে দেওয়া হয়। একই রুমে দুইজনকে পাওয়া গেলেও কী অবস্থায় পাওয়া গেছে তা আমরা নিশ্চিত নই।
স্থানীয় যুবক নয়ন আলী বলেন, আটকের পর ওই শিক্ষার্থী আমাদের জানায়, দীর্ঘ দিন আগে তাকে স্কাউটের পোশাক দিয়েছিলেন শিক্ষক গোলাম কবির। এ সময় একটি কক্ষে পোশাক পরিধান করার সময় কিছু আপত্তিকর ছবি ধারণ করে সেই শিক্ষক। পরে এই ছবির কথা বলে ব্ল্যাকমেইল করে কয়েকবার তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছে শিক্ষক গোলাম কবির।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, ছত্রাজিতপুর স্কুলে ঝামেলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। উত্তেজিত জনতার হাত থেকে ওই শিক্ষক ও ছাত্রীকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়ার অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।