সত্যবার্তা ডেস্ক
নাটোরে তরকারীতে তেল বেশি দেওয়ার কারণে গৃহবধূর সাত আঙ্গুল কর্তনের ঘটনায় প্রধান আসামী’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব। অদ্য ২৭ জুলাই (বুধবার) ২০২২ ইং তারিখ রাত ০৪-৩০ ঘটিকায় বিশেষ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নাটোর জেলার সদর থানাধীন হালসা ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামস্থ এলাকায়, কোম্পানী অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ফরহাদ হোসেন এবং কোম্পানী উপ-অধিনায়ক মোঃ রফিকুল ইসলাম এর নেতৃত্বে একটি অভিযান পরিচালনা করে, নাটোর সদর থানার মামলা নং- ৭৭, তারিখ ২৭/০৭/২০২২, ধারা- ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী-২০০৩) এর ১১ (খ) জিআর- ৫৫০/২২ (নাটোর) এর এজাহার নামীয় পলাতক আসামী ১| মোঃ আব্দুল হাই (৪৫) পিতা- মৃত ফজলু মিয়া, ২| মোঃ রাব্বী মিয়া (২০) পিতা- মোঃ আব্দুল খালেক, উভয়ের সাং- বড় হরিশপুর, থানা ও জেলা- নাটোর’কে গ্রেফতার করা হয়।
উল্লেখ্য যে, প্রায় ১২ বছর পূর্বে অভিযুক্ত মোঃ আব্দুল হাই (৪৫) এর সাথে মোছাঃ মুক্তি খাতুন (৩০) এর বিয়ে হয়। উক্ত সময়ে তাদের এক কন্যা সন্তান ও এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের পর হতে স্বামী মোঃ আব্দুল হাই যৌতুক সহ বিভিন্ন কারণে স্ত্রী মোছাঃ মুক্তি খাতুন এর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৪ জুলাই ২০২২ ইং তারিখ সময় আনুমানিক ১২-০০ ঘটিকায় আসামী আব্দুল হাই তরকারীতে তেল বেশি দেওয়ার কারণে তার মামাতো ভাই মোঃ রাব্বী মিয়া সহ অন্যান্যদের কুপরামর্শে ও ইন্ধনে তার স্ত্রী মোছাঃ মুক্তি খাতুন কে হত্যার উদ্দেশ্য হাসুয়া দিয়ে এলোপাতাড়ী ভাবে কোপাতে থাকে। ফলে মোছাঃ মুক্তি খাতুন এর দুই গালে ও বাম চোঁখের কোণায় হাসুয়ার কোপ লেগে রক্তাক্ত জখম হয়। এসময় মুক্তি খাতুন জীবন রক্ষার্থে স্বামী মোঃ আব্দুল হাই এর হাসুয়ার এলোপাতাড়ী আঘাত দুই হাত দিয়ে প্রতিহত করতে গেলে মুক্তি খাতুন এর বাম হাতের চারটি আঙ্গুল এবং ডান হাতের তিনটি আঙ্গুল কেটে গুরুতর জখম হয় এবং চামড়ার সাথে ঝুলে থাকে। পরবর্তীতে মুক্তি খাতুন এর ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসে এবং তাকে উদ্ধার করে নাটোর সদর আধুনিক হাসপাতালে প্রেরণ করে। মুক্তি খাতুন এর শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। বর্তমানে মুক্তি খাতুন রাজশাহী মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন আছেন। পরবর্তীতে মুক্তি খাতুন এর ভাই বাদী হয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে নাটোর সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
উক্ত বিষয়টি স্থানীয় লোকজন এর মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এছাড়াও স্থানীয় ও জাতীয় ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ায় ” তরকারীতে তেল বেশি দেওয়ায় স্ত্রীর দুই হাতের আঙ্গুল কর্তন ” এই শিরোনামে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। এর প্রেক্ষিতে র্যাব উক্ত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারী জোরদার করে। ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর আসামীগণ এলাকা ছেড়ে পলায়ন এবং ঢাকা সহ বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেওয়ার পরিকল্পনা করে। সর্বশেষ সিপিসি-২ র্যাব-৫ নাটোর ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল বিশেষ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নাটোর জেলার সদর থানাধীন হালসা ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামস্থ এলাকা হতে আসামীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।