সত্যবার্তা ডেস্ক :
নাটোরের উত্তরা গণ ভবনের সামনে বিভিন্ন মহলের ভাসমান দোকান দেওয়ার হিরিক। নাটোরের ঐতিহাসিক উত্তরা গণ ভবন যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় বাসভবন নামে সুপরিচিত দর্শনার্থীদের পর্যটন কেন্দ্র। উত্তরা গণভবনের সামনে দেশ বিদেশ থেকে আশা দর্শনার্থীদের জন্য কিছু ভাসমান দোকান দেওয়া হয়েছে এবং সেখানে প্রায় ৬০ টি দোকান আছে। নাটোর জেলা প্রশাসক এর উদ্যোগে কয়েক বার দোকান গুলো হটানোর চেষ্টা করা হয় এবং পরে স্থানীয় জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদের দাবির প্রেক্ষিতে তা ব্যর্থ হয়ে যায়। দোকান মালিকরা সরকারের কাছে দাবি জানান যেন তাদের দোকান গুলো যদি হটানো হয় তাহলে যেই কোন একপাশে মার্কেট করে দেওয়া হয় তারা প্রয়োজনে মার্কেটে ভাড়া দিয়ে থাকবে। এমন পরিস্থিতিতে নাটোর জেলা প্রশাসক ও নাটোর সদর আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম শিমুল এর সার্বিক প্রচেষ্টায় উত্তরা গণভবনের সামনে মার্কেট করে দেওয়ার জন্য সরকার একটি প্রজেক্ট পাস করেছিল কিন্তু তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। এই ভাসমান দোকানদারেরা একটি কমিটি গঠন করে সেখানে সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ লিটন গাজী কে মনোনীত করা হয় এবং নাটোর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ ছিল যেই দোকান গুলো বর্তমানে আছে সেই গুলোই থাকবে এর বাহিরে নতুন করে কোন দোকান তৈরি করা যেন না হয়। কিন্তু প্রায় দেখা যায় বিভিন্ন ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় দখল বাজরা নতুন নতুন দোকান গড়ে তুলে। সাংবাদিকরা জেলা প্রশাসক ও নির্বাহী কর্মকর্তা কে জানালে সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়ে তা বন্ধ করে দেয়।
আজ পূণরায় উত্তরা গণ ভবনের সামনে দোকান দিতে দেখা যায়, ২৭-০৩-২০২২ ইং তারিখে ভাসমান দোকান কমিটির নবনির্বাচিত সভাপতি মোঃ রাজিব খামারু তার পিতা মোঃ রাজ্জাক খামারু কে নতুন দোকান করে দিচ্ছে। দোকানদারেরা দৈনিক সত্য বার্তা’র নিউজ পোর্টাল কে বিষয় টি জানালে। সত্য বার্তা’র পক্ষ থেকে দিঘাপতিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগাযোগ করলে। সঙ্গে সঙ্গে ভূমি অফিসের নায়েব মোঃ মজিবুর রহমান এর নির্দেশে অফিস সহকারী এস এম মনিরুজ্জামান ঘটনা স্থলে গিয়ে দোকান এর কাজ বন্ধ করে দেয় এবং বলেন যেন দোকানের সরঞ্জাম সব বাড়িতে নিয়ে যায় না হলে দোকানের সরঞ্জাম ভূমি অফিসে নিয়ে যাওয়া হবে। পরে ভূমি অফিসের কর্মকর্তার নির্দেশে দোকান এর কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয় এবং দোকানের সরঞ্জাম খুলে রাজিব খামারুর পিতা বাড়িতে নিয়ে যায়। সরজমিনে গিয়ে আরো জানা যায়। ২৭-০৩-২০২২ ইং তারিখে দিঘাপতিয়া উত্তরা গণ ভবনের সামনে পূণরায় ভাসমান দোকান কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির সভাপতি মোঃ রাজিব খামারু ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ হেলাল উদ্দিন কে করা হয়। কিন্তু প্রায় দোকানদারেরা অভিযোগ করে বলেন, ৩ নং দিঘাপতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ছিল ২৭-০৩-২০২২ তারিখ। এবং প্রতিটি দোকান মালিকদের কাছ থেকে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা চাঁদা তুলে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। হঠাৎ করেই দোকান মালিকদের না বলেই চেয়ারম্যান কাজী শরিফুল ইসলাম বিদ্যুৎ এর উপস্থিতে উত্তরা গণ ভবনের সামনে ভাসমান দোকান কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়।
দোকানদাররা আরো আক্ষেপ করে বলেন, কমিটি করবে ভালো কথা কিন্তু আমাদের তো বলতে হবে কাউকে কিছু না বলেই দোকান কমিটির নাম ঘোষণা করা হলো এবং রাজিব খামারু কে সভাপতি যে করা হলো সে তো ভাসমান দোকান কমিটির কেউ নয় তাহলে কিভাবে সে দোকান কমিটির সভাপতি হয়? তাও কমিটি করেছে আমরা কোন আপত্তি জানাইনি কারণ চেয়ারম্যান সাহেব উপস্থিত ছিলেন কিন্তু ১৫ দিন না যেতেই দখল বাণিজ্য শুরু করে দিয়েছে জনসমর্থনহীন সভাপতি রাজিব খামারু। দোকানদারেরা আরো বলেন, কিছু দিন পর পর আমাদের দোকান গুলো প্রশাসন এর পক্ষ থেকে ভেঙে দেওয়া হয় এই সব নতুন নতুন দোকান করার জন্য। আর এবার যদি আমাদের দোকান গুলো ভাঙ্গা হয় তার সব ক্ষতিপূরণ রাজিব খামারু কে দিতে হবে। এই ভাসমান দোকান কমিটির বিষয়ে ৩ নং দিঘাপতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী শরিফুল ইসলাম বিদ্যুৎ এর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায় তিনি দেশের বাহিরে গেছেন ওমরাহ পালন করতে।