মোঃ রেজাউল করিম
স্টাফ রিপোর্টার
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় পরিকল্পনা ছাড়াই পৌরসভার খামখেয়ালি ড্রেন খননে সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রাচীর ও ভবন ক্ষতিগ্রস্তের অভিযোগ উঠেছে। অপরিকল্পিত ড্রেন নির্মাণ বন্ধ এবং ক্ষতিপূরণ দাবি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পেড়াবাড়িয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় লিখিতভাবে সমবায় ও বিএডিসি দপ্তর মৌখিকভাবে জানিয়েছে।
তাতেও কোনো হয়নি কাজ । বিদ্যালয়, বিএডিসি ও সমবায় দপ্তর সূত্রে জানা যায়, পৌরসভা কাউকে অবিহিত না করেই বিভিন্ন দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানের জমিতে একটি কৃষি মাঠের পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। এতে বিএডিসির একটি পুরাতন ভবন ঝুঁকির মুখে পড়েছে। পাশাপাশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৫০ মিটার সীমানা প্রাচীর উপড়ে ভেঙে পড়ে যাচ্ছে। কোনো রকমে লোহার রড ও নাইলনের দড়ি দিয়ে টানা দিয়ে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে যে কোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কোনো দপ্তরকে না জানিয়ে তাদের জমিতে পৌরসভার ড্রেন নির্মাণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। তারা দ্রুত এ ড্রেন নির্মাণ বন্ধ ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ করেছেন। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানান, বর্ষা মৌসুমে পৌর এলাকার কৃষি জমির ফসল রক্ষার্থে বাগাতিপাড়া পৌরসভার বাস্তবায়নে করোনা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৮৯ লাখ টাকা ব্যায়ে প্রায় ৩৫০ মিটার একটি ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে।
কাজটি করছেন নাটোরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গোলাপ কনস্ট্রাকশন। এ বিষয়ে পৌরসভার স্থানীয় কাউন্সিলর আজিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকেই ওই স্থান দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ছিল। পেড়াবাড়িয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুল হাসান বলেন, বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ও গাছপালার যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে তা নিয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত আকারে জানিয়েছেন। তিনি সিমানা প্রাচীরটি পুনরায় তৈরি করে দেওয়ার দাবি জানান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গোলাপ কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকার গোলাপ হোসেন বলেন, প্রাচীর ঘেঁষে ড্রেনের লে-আউট দেওয়া ঠিক হয়নি। এটি পৌরসভার ভুল। এখানে আমাদের কিছু করার নাই।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ড. সাবরিনা আনাম জানান, ড্রেন নির্মাণ বিষয়ে পৌরসভাকে কোনো অনুমতিপত্র দেওয়া হয়নি। আর বিদ্যালয়ের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে একটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বিএডিসির রাজশাহী অঞ্চলের ডিডি কেএম গোলাম সরোয়ার জানান, ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণের বিষয়ে তাদের কাছে কোনো চিঠি পৌরসভার থেকে দেওয়া হয়নি।
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা ইবনে জামান ফয়জুল কবির তিতাস বলেন, সমবায় সমিতির ওই সম্পত্তি দেখভালের দায়িত্ব তার দপ্তরের উপর। সেই সম্পত্তিতে ড্রেন নির্মাণের বিষয়ে তার দপ্তরকে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানায়নি। বিষয়টি তিনিও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। বাগাতিপাড়া পৌরসভার মেয়র শরিফুল ইসলাম লেলিন বলেন, জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে কাজটি করা হচ্ছে। এতে কোনো স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হলে মেরামত করে দেওয়া হবে।