নাটোর প্রতিনিধিনাটোর সদর উপজেলার ভাতুড়িয়া গ্রামে মসজিদের আত্মসাৎ টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে মক্তব ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে!এ নিয়ে মুসল্লিদের মাঝে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ! সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সদর থানার ওসির উপস্থিতিতে ওই মক্তব ভাংচুর করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মসজিদ কমিটির সভাপতি ইকবাল হোসেন জানান,গত ২০১৯ সালের ১৯ এপ্রিল স্থানীয় শাহাবুদ্দিন হোসেন পানাকে সভাপতি ও নসরত জামানকে সাধারণ সম্পাদক করে ১১ সদস্যবিশিষ্ট ভাতুড়িয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমিটি তিন বছরের জন্য গঠন করে এলাকাবাসী। কিন্তু ২০২১ সালের ২৯ জুনের মধ্যে মসজিদের হিসেব নিয়ে মুসল্লি ও এলাকাবাসীর মনে সন্দেহ দেখা দেয়। পরে এলাকাবাসী ওই কমিটি স্থগিত করে মসজিদের হিসেব চেয়ে পানা ও নসরতসহ সকলকে চাপ দেন। পাশাপাশি ২২ সেপ্টেম্বর তাকে( ইকবালকে) সভাপতি ও কামাল উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক করে ১১সদস্য বিশিষ্ট তিন বছরের মেয়াদে নতুন কমিটি ঘোষনা করেন। এদিকে ২৭ সেপ্টেম্বর এলাকায় সভা ডেকে হিসেব চাইলে আয়-ব্যায় শেষে সভাপতি পানার কাছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৮শ ৮৬ টাকা পাওনা হয় মসজিদ। ওই সভায় পানা তার কাছে থাকা টাকা পরিশোধের জন্য ৩০ নভেম্বরে পরিশোধ করতে অঙ্গীকার করেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের পরও টাকা পরিশোধ করেন নাই পানা। এনিয়ে মুসল্লী ও এলাকাবাসীর মনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে গত ২১ জানুয়ারী ওই টাকা দিতে অস্বীকার করে পানা। বিষয়টি জানাজানি হলে গ্রামে ২৬ জানুয়ারী বৈঠকে পানার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে সিদ্ধান্ত দেয় এলাকাবাসী। এরই ধারাবাহিকতায় ২ ফেব্রুয়ারী সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসককে লিখিত অভিযোগ দেন । এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পানা ও তার সহযোগীরা ইকবাল ও কামালের বিরুদ্ধে এলাকার খাস জলাশয় ৪ লাখ টাকায় লীজ দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করছে এমন মিথ্যা অভিযোগ ইউএনও অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন দেয়৷ এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৮ ফেব্রুয়ারী ইউএনও এবং ওসি ভাতুড়িয়া গ্রামে পৌছেন। এসময় পানা ও তাদের সহযোগীদের মিথ্যা স্বাক্ষ্য নিয়ে এলাকাবাসীর চলাচলের সুবিধার কথা বলে মসজিদের পাশের মক্তব ভেঙ্গে দেন। এছাড়া মসজিদ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে পানার সহযোগীদের সমন্বয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করেন।। এক প্রশ্নের জবাবে কামাল উদ্দিন বলেন, প্রকৃতপক্ষে মসজিদের উন্নয়নকল্পে বরাবরের মতই গ্রামের ২২ টি সমাজ প্রধান সমন্বয়ে একজন গ্রামপ্রধান রুপচাঁদ আলী প্রামাণিক ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারী তিন বছরের জন্য মাসুদ রানা নামে স্থানীয় এক ব্যাক্তির কাছে স্থানীয় তিনটি সরকারী ডহরের জলাশয় ৯০ হাজার টাকায় লীজ প্রদান করে ওই টাকা তৎকালীন মসজিদ কমিটিকে জমা দেন। ওই লীজের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারী। এবিষয়ে মসজিদের স্থানীয় মুসল্লী ও অধিবাসী আবু বকর সিদ্দিক,দেছের আলী প্রামানিক,বেলাল মন্ডল,আব্দুস সালাম ও আব্দুল জলিল বলেন,গ্রামবাসী ও কমিটির লোকজনের সাথে আলোচনা না করে মিথ্যা অভিযোগে মেয়াদ,পূর্ণ হওয়ার আগে ইউএনও বা ওসি মসজিদ কমিটি বিলুপ্ত করতে পারেন কি-না? মসজিদের মক্তব ভাঙ্গার অধিকার তাদের আছে কি? তারা যদি পানার কাছে পাওনা টাকা তুলে মসজিদ কমিটিকে দিতেন তবেই তা জনকল্যানকর হত। এব্যাপারে সরকার,প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। এব্যাপারে জানতে চাইলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা খাতুন বলেন,ওই ব্যাপারে একটা লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা ও ওসি তদন্তে যান। এছাড়া গোপন সংবাদে জানতে পারি, ওই মক্তবকে কেন্দ্র করে গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত হতে পারে। পরে উপস্থিত এলাকাবাসীর মতামত নিয়ে কমিটি বিলুপ্ত ও এলাকাবাসী চলাচলের সুবিধা নিশ্চিতে মক্তবটি
ভাঙ্গা হয়েছে