সত্যবার্তা ডেস্ক:
নানা নাটকীয়তার অবসান শেষে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীদের হামলার স্বীকার হয়ে রাজশাহী মেডিকেলে আইসিইউ তে লাইফ সার্পোটে থাকা ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলিম জীবন কে মৃত ঘোষনা করেছে। শুক্রবার (২৩ শে সেপ্টেম্বর) দুপুর ২ টার সময় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ ঘোষনা দেন। মৃত ঘোষণার পর নিহত জামিউল আলীম জীবন’কে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে নিহত ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলিম জীবনের শোক-সন্তপ্ত পরিবার’কে সমবেদনা জানাতে একই দিন বিকেল ৪ ঘটিকার সময় কয়েক হাজার নেতাকর্মী সহ রামশার কাজীপুর আমতলী গ্রামে জীবনের বাড়িতে আসেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম শিমুল। এসময় খুনি আসাদের ফাঁসির দাবিতে হাজারো জনতার কন্ঠে কম্পিত হয় পুরো রামশার কাজীপুর আমতলী গ্রাম। এসময় নিহত জীবনের রুহের মাগফিরাত কামনা ও তার পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জ্ঞাপন শেষে সাংবাদিক ও উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে এমপি শিমুল বলেন “খুনি আসাদ অন্য দল থেকে অনুপ্রবেশ করে দলীয় ত্যাগী আওয়ামী লীগ পরিবারের নেতাকর্মীদের খুন/হত্যা, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, হয়রানি সহ না অপরাধ ও বিতর্কমূলক কর্মকান্ড একের পর এক করেই যাচ্ছে! তিনি আরো বলেন এই খুনি আসাদ প্রয়াত নেতা শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর নির্বাচনের সময় নিজে শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর নৌকার প্রচারণার মাইক ভাংচুর করেছে। তিনি খুনি আসাদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানান।
এছাড়াও নিহত জামিউল আলীম জীবনের চাচা এসএম ফখরুদ্দিন ফুটু বলেন” আমরা নির্যাতিত আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান, বিগত বিএনপি জোট সরকারের আমলে আমাদের পরিবারের ওপর অমানবিক অত্যাচার নির্যাতন চালানো হয়েছে, এখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার পরেও শিবির থেকে অনুপ্রবেশকারী নেতা উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদের হাতে আমার ভাতিজাকে খুন হতে হয়েছে। আর এই খুনি আসাদকে নিরাপদ করতেই নাটোরের প্রভাবশালী কিছু নেতা তার মৃত ভাতিজা জীবনের লাশ নিয়েও অপরাজনীতি করেছেন। তিনি আরো দাবি করেন প্রভাবশালী নেতাদের মদদে তার মৃত ভাজিতাকে পুনরায় ৭২ ঘন্টা আইসিইউ’তে রেখে জীবন (জীবিত) বলে নাটক তৈরী করা হয়েছে। এসময় তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে খুনি আসাদের ফাঁসির দাবী ও আসাদের মদদ দাতাদের দৃষ্টান্ত মূলক দাবি জানান।
উল্লেখ্য যে গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে নলডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ বিরুদ্ধে মসজিদের মাইক চুরির সালিশে পক্ষপাতিত্ব এবং দুর্নীতির অভিযোগ তোলে ফেসবুক লাইভ করেন উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলিম জীবন। এর জের ধরে পরের দিন ১৯ সেপ্টেম্বর (সোমবার) সন্ধ্যা ৭ টার দিকে নলডাঙ্গা উপজেলার রামশা কাজিপুর আমতলী বাজারে জীবন’কে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পেটান আসাদুজ্জামান আসাদ, ও তার দুই ভাইসহ ৫ জন। এ সময় বাধা দেওয়ায় জীবনের বাবা ফরহাদ হোসেন’কেও পেটানো হয়। এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে রাতেই প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতাল ও পরে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ২০ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) দুপুরেই জীবনের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ ও তার ২ ভাইসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলা দায়েরের পরদিন পুলিশ মামলার আসামী উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদের ভাই আলিম আল রাজীকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে নলডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম পলাশ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের পিটুনীতে আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে লাইফ সাপর্টে থাকা ছাত্রলীগ নেতা জীবন শুক্রবার দুপুরে মৃত্যুবরণ করেন। এবং পলাতক আসামীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোন ধরনের বিশৃংখলা ঠেকাতে পুলিশ সর্তক রয়েছে।