সত্যবার্তা ডেস্ক :
৩ নভেম্বরকে জাতীয় শোক দিবস, ১০ এপ্রিলকে প্রজাতন্ত্র দিবস ঘোষণাসহ তিন দফা দাবিতে পদযাত্রা করে গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার প্রতিনিধিরা এই স্মারকলিপি গ্রহণ করেন বলে গণভবন থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সোহেল তাজ।
এর আগে গতকাল বিকাল সাড়ে চারটার দিকে সোহেল তাজ সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার ফটক থেকে গণভবনের উদ্দেশে পদযাত্রা করেন।
১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়। আর ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তাজউদ্দীন আহমদসহ জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে স্বাধীনতাবিরোধীরা।
তিন দফা দাবিতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গতকাল বিকাল চারটার দিকে শেরেবাংলা নগরে সংসদ ভবনের দক্ষিণ ফটকে কয়েক শ মানুষ নিয়ে অবস্থান নেন সোহেল তাজ। তাদের অনেকের হাতে ছিল তিন দফা দাবি সংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন। পরে সাড়ে চারটার দিকে তারা গণভবনের দিকে পদযাত্রা করেন। মিছিলে সোহেল তাজের সঙ্গে ছিলেন তার বড় বোন মেহজাবিন আহমদ মিমি, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজসহ অনেকে।
গণভবনে স্মারকলিপি দিয়ে বের হয়ে সোহেল তাজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ ১০ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠন হয়েছিল এদিন। আমি আজ প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি আমার তিনটা দাবি নিয়ে।’
সোহেল তাজ বলেন, `আমার প্রথম দাবি, বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠনের দিনকে প্রজাতন্ত্র দিবস ঘোষণা করতে হবে। দ্বিতীয় দাবি, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। এরপর জাতীয় চার নেতাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। জাতীয় চার নেতা তাদের তাজা রক্ত দিয়ে প্রমাণ করে গিয়েছিলেন তারা বঙ্গবন্ধুর সাথে, বাংলাদেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেননি। তাদের স্বরণে ৩ নভেম্বর জেল হত্যা দিবসকে শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পালন করতে হবে।’
‘আমার তৃতীয় দাবি, জাতীয় চার নেতাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের সব বেসামরিক ও সামরিক সংগঠক, পরিচালক, অমর শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম, অবদান, জীবনীসহ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস যথাযথ মর্যাদা ও গুরুত্বের সঙ্গে সর্বস্তরের পাঠ্যপুস্তকে এবং সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
তার দাবি সপক্ষে সোহেল তাজ বলেন, ‘আমি মনে করি মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে যদি ফাঁকফোকর থাকে, তাহলে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিরা তাতে মিথ্যা তথ্য দেবে।’
বাংলাদেশকে সোনার বাংলা হিসেবে বিনির্মাণ করতে ও ভবিষৎ প্রজন্মকে ভালোভাবে গড়তে হলে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে হবে উল্লেখ করে সোহেল তাজ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, আমাদের প্রাণশক্তি খুঁজে পাব ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সঠিকভাবে এবং পূর্ণাঙ্গভাবে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে।’
এর আগে গত ৭ এপ্রিল ফেসবুকে নিজের ভেরিফাইড পেজে তিন দফা দাবি ও কর্মসূচি ঘোষণা করেন তাজউদ্দীন-পুত্র। সেখানে তিনি লিখেছিলেন এই কর্মসূচি একান্তই তার নিজের উদ্যোগ। তিনি ভক্ত-অনুসারীদের উদ্দেশে আরও লেখেন, ‘আপনারা কেউ যোগ দিতে চাইলে আসতে পারেন। আর না এলে আমি একাই যাবো- জয় বাংলা।’