আজ- রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Shotto Barta Logo

শিরোনাম

প্রধানমন্ত্রীকে মা সম্বোধন : আরেকটি সুযোগ চান দুদকের শরীফ

 

নিজেস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে তা বাস্তবায়ন করতে গিয়েই প্রভাবশালীদের রোষানলে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক থেকে সদ্য অপসারিত উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন। তিনি বলেন, দুদকের সহকর্মী, মিডিয়াকর্মী ও মানুষের দোয়ার কারণে আমি গুম হওয়া থেকে রেহাই পেয়েছি। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নজর। তিনি ন্যায়বিচারের প্রতীক। প্রধানমন্ত্রীর কারণে গুম হওয়া থেকে বেঁচে গেছি।
প্রধানমন্ত্রীকে ‘মা’ সম্বোধন করে শরীফ বলেন, আপনি আমার মা। আমি আপনার অসহায় একটি ছেলে। পরিবার ও বাচ্চা নিয়ে খুব সমস্যায় আছি। আমি গত দুই সপ্তাহ ধরে ঘুমাতে পারছি না। আমাকে আরেকটিবার সুযোগ দেয়া হোক। কমিশনের যত অভিযোগ রয়েছে তার ব্যাখ্যা দিতে পারব। সব ডকুমেন্টস আমার কাছে রয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের এসব কথা বলেন তিনি। একটি বিভাগীয় মামলার হাজিরা দিতে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন শরীফ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। যে বিষয়ে একটি মিশন-ভিশন রয়েছে। সে মিশন-ভিশন বাস্তবায়ন করতে গিয়েই প্রভাবশালীদের রোষানলে পড়েছি। আমাকে সরাসরি অপসারণ করে দুদকে আসার পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমি আসলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট হিসেবে আসতে পারব। দুঃখজনক হলেও সত্য, আমি অপসারিত হওয়ার পরও বিভাগীয় মামলার হাজিরা দিচ্ছি। তিনি বলেন, আমার কাছে খুব বিব্রতকর পরিস্থিতি যে দুদকের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি হিসেবে এখানে হাজিরা দিতে এসেছি। আপনারা জানেন, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আমাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। আমি অপসারিত হওয়ার পরও বিভাগীয় মামলায় হাজিরা দিচ্ছি, এটা আইনের দৃষ্টিতে কতটুক সাম্য আমি বলতে পারব না। তবে এটা নিয়ে আমি বিব্রত। আমার বিরুদ্ধে তিনটি ডিপি চলমান রয়েছে। প্রথমটা হলো ব্যাংক হিসাব নো-ডেবিট সংক্রান্ত, দ্বিতীয়টা নথি হস্তান্তরে বিলম্ব কেন ও তৃতীয়টা হলো দেরিতে কর্মস্থলে যোগদান কেন?
তিনি বলেন, আজকের বিভাগীয় মামলার বিষয়বস্তু হলো আমি নথি হস্তান্তরে দেরি করেছি কেন? যার তদন্তের দায়িত্বে আছেন উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান। আমি সশরীরে হাজির হয়ে, যাবতীয় প্রমাণ তার কাছে দিয়েছি। এ বিষয়ে আমি বলতে চাই, আমার কাছে ১৩০টি নথিপত্র ছিল। মামলাগুলো অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর ও হাই-সেনসিটিভ ছিল। ছয়টি আলমারিতে সেগুলো ছিল। তা আরেকজনকে বুঝিয়ে দেয়া সময়সাপেক্ষ বিষয়। পটুয়াখালী থেকে আমাকে ফাইল বুঝিয়ে দিতে আসতে দেয়া হয়নি। গত ২২ আগস্ট নির্দেশনা পাওয়ার পর আমি পাঁচ দিন ধরে নথিগুলো বুঝিয়ে দিই। যারা ফাইলগুলো বুঝে নিয়েছেন, তাদের জিজ্ঞেস করলে মূল ঘটনা জানতে পারবেন।
তার বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতনদের মিসগাইড করা হয়েছে উল্লেখ করে শরীফ বলেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি চাকরিবিধি অনুযায়ী কমিশন বরাবর আদেশ রিভিউ করার জন্য আবেদন করেছি। আশা করি, কমিশন আমার আবেদন গ্রহণ করবে এবং ন্যায়বিচার পাব। এছাড়া তার বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগগুলোর বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে দেয়া বক্তব্যে আগের অবস্থানে অটল রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুদক চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে মো. শরীফ উদ্দিনকে অপসারণ করা হয়। ওই প্রজ্ঞাপনে দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৫৪ (২)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তাকে অপসারণ করার কথা বলা হয়। পর দিন কমিশনের প্রধান কার্যালয়সহ ২১ জেলায় দুদকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ওই বিধি বাতিল এবং অপসারণের আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেন।
এরপর ২০ ফেব্রুয়ারি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন শরীফকে অপসারণের ১৩টি কারণের কথা জানান। দুদক সচিব বলেন, শরীফ উদ্দিনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বহু অভিযোগ কমিশনে থাকায় তাকে অপসারণ করতে হয়েছে। কমিশনের শৃঙ্খলা ও সুষ্ঠু কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে কমিশনে বিস্তারিত আলোচনার পর শরীফ উদ্দিনকে অপসারণ করা হয়েছে। এর পর দিন ২১ ফেব্রুয়ারি এক ভিডিও বার্তায় দুদকের ১৩ অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন শরীফ।

শেয়ার করুন :

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

এই রকম আরোও খবর

সাক্ষাৎকার