নিজেস্ব প্রতিবেদক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন হয়েছে। করোনাকালেও ভালো প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এখন আর বিদেশিদের কাছে হাত পাততে হয় না। এখন সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া। বৈশ্বিক নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মেলাতে বিজ্ঞানী ও গবেষকদের কাজ করতে হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আয়োজিত বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ ও গবেষণা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন তিনি।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, বিজ্ঞানী, গবেষক এবং বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’, ‘এনএসটি ফেলোশিপ’ এবং ‘বিশেষ গবেষণা অনুদান’ প্রদান করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। তার সঙ্গে তাল মিলিয়েই আমাদের চলতে হবে। আমাদের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর। কাজেই এই কৃষিকে যেমন যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে উন্নত করতে হবে, পাশাপাশি শিল্পায়নও আমাদের দরকার।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করে সরকারপ্রধান বলেন, শিল্পায়নের ক্ষেত্রে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে। তার জন্য উপযুক্ত দক্ষ মানবশক্তি গড়ে তুলতে হবে এবং সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা আপনাদের সহযোগিতা করে যাচ্ছি।
গবেষকদের সর্বোচ্চ শ্রম ও দায়বদ্ধতা নিয়ে জাতীয় উন্নয়নে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের দেয়া রাজস্ব থেকে আপনাদের ফেলোশিপ এবং গবেষণা অনুদান দেয়া হচ্ছে। আপনাদেরও সর্ব্বোচ্চ শ্রম ও দায়বদ্ধতা নিয়ে জাতীয় উন্নয়নে কাজ করতে হবে। কারণ আমরা চাই দক্ষ মানব শক্তি গড়ে তুলতে।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ যাতে আপনাদের কাছ থেকে সহযোগিতা পায় সেটাই আমরা চাই। আপনাদের উদ্ভাবনী জ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগ যেন মানুষের কল্যাণে হয়। কাজেই যারা আজকে গবেষণা করছেন সেই গবেষণার কী ফলাফল হলো- সেটাও আমি দেখতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তির নতুন নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে। দেশের ৮টি বিভাগেই শিক্ষার্থীদের মেধা ও মননের বিকাশে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার প্রতিষ্ঠা করব। ইতোমধ্যে চার-পাঁচটি বিভাগে নভোথিয়েটার স্থাপনের প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে।
গবেষণা না থাকলে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা সম্ভব হতো না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আজকে আমরা উন্নতি করতে পারতাম না যদি গবেষণা না থাকত। এজন্য আমি গবেষণাকে সব থেকে গুরুত্ব দেই। বিশেষ করে বিজ্ঞানের গবেষণা ও মেডিকেল সায়েন্সের গবেষণা। মেডিকেলের ওপর আমাদের গবেষণা একটু কম। দেশের ৭০ শতাংশের কাছাকাছি মানুষ করোনা ভাইরাসের টিকা পেয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মহামারি পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। টিকা এখন সবাইকেই নিতে হবে। এর আগে আমি দেখেছি অনীহা। কিন্তু এখন আমি দেখতে পাচ্ছি মানুষের মধ্যে আগ্রহ হয়েছে।
ইতোমধ্যে স্কুল কলেজ খুলে দেয়ার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এটা স্বাভাবিকভাবে চলবে। কিন্তু সেই সঙ্গে সঙ্গে টিকা। আমরা ১২ বছর পর্যন্ত দিচ্ছি। ইতোমধ্যে ডব্লিউএইচওর কাছে আবেদন করা হয়েছে যে আরো অল্প বয়সের শিশুদের জন্য টিকা দেয়ার অনুমতির জন্য। আমার মনে হয় এটা ইতোমধ্যে এসে যাবে। তখন আমরা সবাইকে টিকা দিতে পারব।
সরকারপ্রধান বলেন, অন্তত ৭/৮ বছর থেকে বা ৮ বছর থেকে বা ১০ বছর থেকে যদি দিতে পারি, তাহলে আমাদের প্রাইমারিতে আর কোনো অসুবিধা হবে না। তারাও খুব নিশ্চিন্তে যেতে পারবে। তবে আমরা স্কুল খুলে দিচ্ছি। সেগুলো চালু হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে তাদের সুরক্ষটা একান্তভাবে দরকার। সেটা আমরা করব। কাজেই এক্ষেত্রে যারা সহযোগিতা করেন সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।