সত্যবার্তা ডেস্ক:
কেউ তাকে চেনেন সিনেমার প্রযোজক হিসেবে, কেউ চেনে ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে। কিন্তু চাঁদপুর জেলার বাসিন্দারা সেলিম খানকে চিনে থাকেন ‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান হিসেবে। গত ৮ বছর ধরে পদ্মা ও মেঘনা থেকে অবাধে বালু উত্তোলন উত্তোলন করছেন সদর উপজেলার ১০ নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের এই ইউপি চেয়ারম্যান। কিন্তু এই ৮ বছরে সরকারকে এক টাকাও রাজস্ব দেননি সেলিম খান। সম্প্রতি বিষয়টি সরকারের নজরে আসায় রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ১৩ কোটি ৭১ লাখ টাকা জমা দিয়ে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা বাঁচতে চাচ্ছেন সেলিম খান। কিন্তু জেলা প্রশাসনকে প্রতি ঘনফুটে ২৫ পয়সা করে রাজস্ব দিলে সরকারি কোষাগারে জমা পড়ত প্রায় ২৮৮ কোটি টাকা। এর বাইরে ভ্যাট ও আয়কর বাবদ আরও টাকা দিতে হতো। জানা যায়, চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে থেকে ৩ শতাধিক অবৈধ ড্রেজার ব্যবহার করে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করছেন সেলিম খান। কিন্তু তার নামে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করার কোনো বৈধতা নেই। এমনকি স্থানীয় জেলা, উপজেলা প্রশাসন কিংবা বিআইডব্লিউটিএও তাকে কোন প্রকার আদেশ নির্দেশ প্রদান করেনি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১৪ সালে ডুবোচর খননের জন্য সেলিম খানের ভাই বোরহান খানকে নদী দুটির নির্দিষ্ট মৌজায় বালু উত্তোলনের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। কিন্তু উত্তোলিত বালু বিক্রির অনুমতি দেননি। তারপরও তিনি বালু বিক্রি করছেন। সেই নির্দেশ কাজে লাগিয়েই বছরের পর বছর অসাধুভাবে শত শত কোটি টাকার বালু বিক্রি করেছেন সেলিম খান। কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চাঁদপুরে পদ্মা ও মেঘনার প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকা থেকে এককভাবে শতাধিক ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করেছেন তিনি। সরকারি বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করে সেলিম খানের অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারণে বেড়েছে নদীভাঙন। সেই সঙ্গে ইলিশসহ মৎস্যসম্পদ এবং জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। একইসঙ্গে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।