আজ- বৃহস্পতিবার, ১০ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Shotto Barta Logo

শিরোনাম

লাশের সঙ্গে যৌনাচার : ৩ দিনের রিমান্ডে লাশঘরের সেই পাহারাদার

সত্য বার্তা ডেস্ক  :

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশঘরে শিশু ও এক নারীর লাশের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের অভিযোগে লাশঘরের পাহারাদার সেলিমকে (৪৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হালিমের আদালত গ্রেপ্তার সেলিমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে সোমবার দুপুরে চমেক হাসপাতাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হলেও বিষয়টি গণমাধ্যমে জানানো হয় রাতে। গ্রেপ্তার সেলিম কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার সাতেশ্বর গ্রামের মৃত নোয়াব আলীর ছেলে। চমেক হাসপাতালের লাশঘরে অস্থায়ী ভিত্তিতে সেলিম কাজ করত।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানান, ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি নগরীর পাঁচলাইশ থানা এলাকা থেকে ৩২ বছর বয়সি এক নারী ও ২৫ এপ্রিল চান্দগাঁও থানা এলাকা থেকে ১২ বছর বয়সি এক শিশুর মরদেহ নিয়ে আসা হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে।

 

দুটোই আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা। দুজনকেই হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ লাশ ঘরে রাখার পরদিন হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য। লাশগুলোর সুরতহাল প্রতিবেদনে কোনো আঘাতের চিহ্ন কিংবা জোর জবরদস্তি আলামত না মিললেও ময়নাতদন্তের সময় চমেকের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক ওই নারী ও শিশুর মরদেহে হাই ভ্যাজাইনাল সোয়াব-এইচভিএস পাওয়া যায়। মৃত্যুর আগে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন কিনা সেটা জানতে আলামত সংগ্রহ করে ঢাকায় সিআইডির ল্যাবে পাঠানো হয়। সিআইডির ডিএনএ ল্যাবের বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষায় দুজনের ভ্যাজাইনাল টিস্যু থেকে একই ধরনের বীর্যের উপস্থিতি পান। ডিএনএ পরীক্ষায়ও দেখা যায়, দুজনকে ধর্ষণকারী একই ব্যক্তি। দুই মাসের ব্যবধানে দুটি অপমৃত্যুর ঘটনায় দুই নারীর দেহে একই পুরুষের শুক্রাণুর উপস্থিতির ঘটনায় বিস্মিত হয় সিআইডি। সিনিয়র কর্মকর্তাদের নির্দেশে এ ঘটনার অনুসন্ধানে নামেন সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের এসআই কৃষ্ণ কমল ভৌমিক।

 

সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের সিনিয়র পুলিশ সুপার মো. শাহনেওয়াজ খালেদ জানান, ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে নেমে মর্গের ডোম এবং লাশ ঘরের পাহারার দায়িত্বে থাকা বেশ কয়েকজনকে চট্টগ্রাম সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে চা পানের আড়ালে মুখের লালা থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তাদের মধ্যে লাশ ঘরের পাহারাদার সেলিমের সঙ্গে ওই দুই নারী ও কিশোরীর লাশে পাওয়া শুক্রাণুর মিল পাওয়া যায়। অনুসন্ধানে নিশ্চিত হই, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের লাশঘরে লাশগুলো যখন ছিল, তখন সুযোগ বুঝে সেলিম লাশগুলোর সঙ্গে বিকৃত যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হয়। শাহনেওয়াজ খালেদ জানান, সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার পর সেলিমের বিরুদ্ধে ব্যভিচারের অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩৭৭/১০৯ ধারায় সিআইডির উপপরিদর্শক (এসআই) কৃষ্ণ কমল ভৌমিক বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সেলিম দুই লাশের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের কথা স্বীকার করেছে। এরপরও বিস্তারিত জানতে আমরা তাকে রিমান্ডে নিয়ে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করব।

 

২০১৭ সালেও তার বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় একটি ধর্ষণের মামলা হয়েছিল।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের প্রসিকিউশন শাখার এসআই শাহীন ভূঁইয়া বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সেলিমকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

 

 

২০২০ সালের নভেম্বরে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে। সেই সময় পাঁচ নারীর লাশের সঙ্গে যৌনাচার করার অপরাধে মুন্না নামের ডোমের এক সহকারীকে গ্রেপ্তার করেছিল সিআইডি।

শেয়ার করুন :

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

এই রকম আরোও খবর