সত্য বার্তা ডেস্ক:
ফেসবুকে সমকামিতার প্রলোভন দেখিয়ে বাসায় নিয়ে এসে মুক্তিপণ দাবি করতেন। মুক্তিপণ না পেলে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলতেন। এমন একটি চক্রের মূলহোতা তারেক সহ ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত ১৭-১২-২০২২ ইং তারিখে সমকামিতার ফাঁদে পড়ে নোয়াখালী থেকে ঢাকায় আসেন আমির হোসেন (২৪) নামের এক যুবক। রাজধানী ঢাকায় তার বড় বোনের বাসায় ওঠেন আমির হোসেন। পরে সমকামিতা ফাঁদ চক্রের সদস্যরা আমির কে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ওই চক্রের সদস্যরা। পরিবারের লোকজন এত টাকা দিতে না পারায় আমির হোসেনকে হত্যা করা হয়। পরবর্তীতে নিখোঁজ আমিরের অর্ধগলিত মরদেহ ঢাকার গাজীপুর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ এই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারে ১টি নয় ২টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে এই চক্রের সদস্যরা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, এই চক্রের মূলহোতা নাটোর সদর উপজেলার তেবাড়িয়া ইউনিয়নের রুইয়েরবাগ এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে মোঃ তারেক। ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করার সময় ২০১৪ সালে বিয়ে করেন তারেক। পরবর্তীতে বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগর গ্রামের হৃদয়ের সঙ্গে সমকামিতায় লিপ্ত হন তারেক। বিষয়টি জানতে পেরে তার স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে ২০২০ সালে চলে যান। পরে ফেসবুকে “কষ্টের জীবন” নামের একটি ভুয়া আইডি খুলে সমকামিতার প্রলোভন দেখিয়ে তারেক টাকা কামাই করার নেশায় মেতে উঠেন।
এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোছাঃ রেজিয়া খাতুন (এস আই) তিনি বলেন, ফেসবুকে নাটোরের রুবেলের সঙ্গে পরিচয় হয় তারেক এর। সমকামিতার কথা বলে ১১ নভেম্বর ২০২২ সালে তারেকের বাসায় নিয়ে যান। পরে তার বাড়িতে খাওয়া দাওয়া করে কিছু জায়গায় ঘোরাঘুরি করেন। রাত আনুমানিক ১১ টার সময় সেভেন আপের সঙ্গে ঘুমের ঔষুধ মিশিয়ে রুবেল কে খাওয়ান। রুবেল অচেতন হয়ে পড়লে তারেক গলায় রশি পেঁচিয়ে রুবেলকে হত্যা করেন। পরে রুবেলের মৃতদেহ বস্তায় ভরে তার বাড়ির পাশে একটি বাগানে পুঁতে রেখে তারেক ঢাকায় চলে যায়। তারেক রুবেলের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ হিসাবে ৩০ হাজার টাকাও হাতিয়ে নেন। এবং ঢাকায় গিয়ে একই কায়দায় নোয়াখালীর আমির হোসেনকে সমকামিতার কথা বলে ঢাকার গাজীপুর এলাকায় নিয়ে এসে তারেক আহমেদ ও তার সহযোগী হৃদয় আলী আমির হোসেনকে হত্যা করে।
পরবর্তীতে মামলার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ সমকামিতা চক্রের মূলহোতা মোঃ তারেক আহমেদ (৩৪), হৃদয় আলী (২৪), মোঃ আশরাফুল ইসলাম (২৩), মোঃ রাসেল সরদার (২৫), মোঃ তৌহিদুল ইসলাম বাবু (৩০), কে ঢাকার আশপাশ গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। পরে পুলিশ জানতে পারে রুবেল এর মৃতদেহ তারেকের বাড়ির পাশে একটি বাগানে পুঁতে রাখা হয়েছে। শনিবার (২০ মে) পুলিশ নাটোর থেকে রুবেল এর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে।