সত্য বার্তা ডেস্ক:
সবার মনের মধ্যে একটি কমন প্রশ্ন আছে , তা হচ্ছে স্বামী-স্ত্রী যদি একই রকমের ব্লাড গ্রুপের হন তবে কোন সমস্যা আছে কিনা ? বিষয়টি সবার জানা অত্যন্ত জরুরী। প্রথমেই বলে নেই উত্তরটি। “না, কোন সমস্যা নেই।
এবার চলুন ব্যাখ্যা করা যাক।
মানুষের শরীরে যে রক্ত থাকে তাকে অসংখ্য গ্রুপে ভাগ করা যায়। তারমধ্যে সবচেয়ে কমন চারটি গ্রুপ হচ্ছে ‘এ’, ‘বি’, ‘এবি’ এবং ‘ও’। এটি নির্ভর করে কোন ধরনের প্রোটিন বা আমিষ রক্তের উপাদান এর মধ্যে রয়েছে তার উপরে। দেখা গেছে আরেকটি উপাদান যাকে আমরা আরএইচ ফ্যাক্টর বলি তা রক্তের মধ্যে থাকতেও পারে আবার নাও পারে। যাদের রক্তের মধ্যে আরএইচ ফ্যাক্টর থাকে তাদের আমরা পজেটিভ বলি। যেমন “এ পজেটিভ”, “বি পজেটিভ” “এবি পজেটিভ” এবং “ও পজেটিভ”। যাদের রক্তের মধ্যে আরএইচ ফ্যাক্টর উপাদানটি নেই তাদের আমরা নেগেটিভ বলি। যেমন “এ নেগেটিভ” “বি নেগেটিভ” “এবি নেগেটিভ” এবং “ও নেগেটিভ”।
এবার আসুন সমস্যাটা কখন এবং কোথায়?
যদি কোন মায়ের রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ হয় এবং বাবার রক্তের গ্রুপ পজেটিভ হয় তবে বাচ্চার রক্তের গ্রুপটিও পজেটিভ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তখন নেগেটিভ মায়ের গর্ভে পজেটিভ সন্তান জন্ম নিলে মায়ের শরীরে আরএইচ ফ্যাক্টর এর বিপরীতে এক ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। যা প্রথম শিশুর জন্য কোন ক্ষতির কারণ না হলেও পরবর্তী সন্তানের জন্য অত্যন্ত বিপদজনক এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দ্বিতীয় বাচ্চাটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে বা জন্মগ্রহণ এর কিছুক্ষণের মধ্যে মারা যেতে পারে।
পরিত্রাণের উপায়?
প্রথম বাচ্চা জন্মগ্রহণ এর ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই একটি ইনজেকশন দিলে পরবর্তী বাচ্চার ক্ষতির সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। রক্তদানের ক্ষেত্রেও ঠিক একই।
একজন নেগেটিভ ব্যক্তি কে যদি পজিটিভ ব্লাড দেয়া যায় সেখানে অনেক ক্ষতি হতে পারে। তবে হ্যাঁ যদি কোন পজিটিভ ব্যক্তি কে নেগেটিভ রক্ত দেয়া যায় অথবা কোন মা যদি পজেটিভ এবং বাবা যদি নেগেটিভ হয় সে ক্ষেত্রে কোন ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে না।
এ থেকে আমরা বুঝতে পারলাম বাবা নেগেটিভ হলে কোন সমস্যা নেই। আর রক্তদাতা নেগেটিভ হলেও কোন সমস্যা নেই। সুতরাং প্রত্যেকটি মানুষের অবশ্যই বিয়ের আগে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করে নিতে হবে এই কারণে যে স্ত্রী যদি নেগেটিভ এবং স্বামী যদি পজিটিভ হন তবে সমস্যা হতে পারে অন্য কিছু নয়। তবে রক্ত দানের ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে, যে গ্রুপের রক্ত যার তাকে সেই গ্রুপেরই রক্ত দিতে হবে। যেমন এ গ্রুপ কে এ গ্রুপের রক্ত দিতে হবে। মনে রাখবেন যদি কোন কারনে সেই গ্রুপের রক্ত পাওয়া না যায় তবে “ও নেগেটিভ” রক্ত সবাইকে দেয়া যেতে পারে এবং “এবি পজেটিভ” যার সে যেকোনো ধরনের রক্ত নিতে পারে।
এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন, ডা. মাহমুদুল হাসান মুন্না” এম বি বি এস, বিসিএস, এমডি (ফেজ বি) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।