গণঅভ্যুত্থানের সময় গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা ভুক্তভোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি মুহূর্ত বলে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের (ওএইচসিএইচআর) দপ্তরের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি।

তবে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়ায় তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শামদাসানি এ মন্তব্য করেন।

জাতিসংঘের মতে, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে আগস্টের মধ্যে প্রায় এক হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হন এবং এ ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে হাসিনার অনুপস্থিতিতে তার ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে শামদাসানি বলেন, 'প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে আমরা নির্দেশদাতা ও নেতৃত্বের অবস্থানে থাকা ব্যক্তিদেরসহ দোষীদের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে আসছিলাম।'

'পাশাপাশি ভুক্তভোগীদের কার্যকর প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ব্যবস্থা করারও আহ্বান জানিয়েছি,' যোগ করেন তিনি।

শামদাসানি জোর দিয়ে বলেন, 'আমি ধারাবাহিকভাবে বলে এসেছি, আন্তর্জাতিক অপরাধের অভিযোগগুলো যেন প্রশ্নাতীতভাবে যথাযথ প্রক্রিয়া ও ন্যায়বিচারের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করে।'

'এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ যখন, এ মামলার ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে—অভিযুক্তের অনুপস্থিতিতে বিচার হয়েছে এবং মৃত্যুদণ্ডের শান্তি দেওয়া হয়েছে।'

'আমরা…মৃত্যুদণ্ড প্রদানকে দুঃখের সঙ্গে দেখি, আমরা সব পরিস্থিতিতেই এর বিরোধিতা করি,' যোগ করেন মুখপাত্র।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক আশা প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশ সত্য প্রকাশ, ক্ষতিপূরণ ও ন্যায়বিচারের একটি সমন্বিত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐক্য ও ক্ষত কাটিয়ে ওঠার দিকে এগিয়ে যাবে।

'এ প্রক্রিয়ায় নিরাপত্তা খাতের অর্থবহ ও রূপান্তরমূলক সংস্কার অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত, যে সংস্কার হবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, যেন আর কখনো মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের ঘটনা না ঘটে।'