ভূমিকম্পে আতঙ্কিত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ভবন থেকে লাফ দিয়ে পড়ে অন্তত তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮মিনিটে ঢাকায় ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। 

সহকারী আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭। সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ডে এই ভূমিকম্প হয়। এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ১৩ কিলোমিটার পূর্বে নরসিংদীর মাধবদী এলাকায়। 

আহতদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থীর পা ভেঙে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৮–১৯ সেশনের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ এবং একই সেশনের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের এক শিক্ষার্থী আতঙ্কে ভবন থেকে লাফ দিয়ে আহত হয়েছেন।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের পর এ এফ রহমান হলে একটি কক্ষ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল, কবি জসীমউদ্দীন হল, স্যার এ এফ রহমান হল, মোকাররম ভবন ও শেখ ফজলুল হক হলসহ বিভিন্ন হলের দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে।শামসুন্নাহার হলের এক ভবনের একটি দেয়াল আংশিক বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পাওয়া গেছে। 

ঢাবি শিক্ষার্থীদের জন্য 'স্বাধীনতা ভবন' বরাদ্দের দাবি

এদিকে, ভূমিকম্পের পর হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের একদল শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মিত ২০তলা 'স্বাধীনতা ভবন' ঘিরে ফেলেন এবং তা শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দের দাবি জানান। তাদের অভিযোগ, বর্তমান আবাসিক হলগুলো এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে যে শিক্ষার্থীদের জীবন সবসময় হুমকির মুখে থাকে।

আন্দোলনকারীদের পক্ষে এক শিক্ষার্থী বলেন, 'ভিসি স্যার সময়মতো না এলে এবং স্বাধীনতা ভবন আমাদের জন্য বরাদ্দ না দিলে আমরা নিজেরাই ভবনের প্রতিটি কক্ষে ঢুকে অবস্থান নেবো।'

আন্দোলনকারীদের একজন মহসীন হল সংসদের সমাজসেবা সম্পাদক মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, 'জীবন বাঁচাতে আমাদের পাঁচতলা থেকে লাফ দিতে হয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বারবার ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছি, কিন্তু কিছুই করা হয়নি।'

তিনি আরও বলেন, 'রানা প্লাজার মতো কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কি শুধু সমবেদনা জানিয়ে দায় এড়াবে?'