‘প্রশাসনকে আন্ডারে আনতে হবে’ বলা জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরীকে শোকজ
প্রশাসন নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীর 'বিতর্কিত' বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে দলের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে।গত সোমবার জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সই করা নোটিশটি দেওয়া হয়। আজ মঙ্গলবার তা দলটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়েছে।গত ২২ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগরের জিইসি কনভেনশন হলে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত 'নির্বাচনী দায়িত্বশীল সম্মেলন'-এ আগামী সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে বস...
প্রশাসন নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীর 'বিতর্কিত' বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে দলের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে।
গত সোমবার জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সই করা নোটিশটি দেওয়া হয়। আজ মঙ্গলবার তা দলটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়েছে।
গত ২২ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগরের জিইসি কনভেনশন হলে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত 'নির্বাচনী দায়িত্বশীল সম্মেলন'-এ আগামী সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে বস্তা বস্তা টাকা ও অস্ত্র ঢুকবে বলে মন্তব্য করেন শাহজাহান চৌধুরী।
তিনি চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে জামায়াতের মনোনীত এই প্রার্থী ওই সভায় আরও বলেন, 'নির্বাচন শুধু জনগণ দিয়ে নয়...যার যার নির্বাচনী এলাকায় প্রশাসনের যারা আছে, তাদের সবাইকে আমাদের আন্ডারে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের কথায় উঠবে, আমাদের কথায় বসবে, আমাদের কথায় গ্রেপ্তার করবে, আমাদের কথায় মামলা করবে।'
কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়, 'আপনার এই বক্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। আমরা বক্তব্যটি দেখেছি, যা রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের পেশাদারিত্ব, নিরপেক্ষতা ও মূল স্পিরিটকে স্পষ্টভাবে ব্যাহত করেছে। আমরা মনে করি, প্রশাসন পূর্ণ পেশাদারিত্বের সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করবেন, এখানে আমাদের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই।'
নোটিশে আরও বলা হয়, 'ইতোমধ্যে বিভিন্ন সময়ে আপনি (শাহজাহান চৌধুরী) এই ধরনের সাংগঠনিক ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্নকারী ও শৃঙ্খলা বিরোধী বক্তব্য রেখেছেন। যার ফলে আপনাকে কয়েকবার সতর্ক করা হয়েছে ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এমনকি আমিরে জামায়াতও আপনাকে ডেকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এবং সতর্ক করেছেন। তারপরেও আপনার মধ্যে কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।'
এই বক্তব্য প্রকাশের পর প্রশাসনের বিভিন্ন স্তর থেকে তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয় নোটিশে। বলা হয়, 'দেশের কূটনৈতিক মহল থেকেও সরাসরি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে দেশ-বিদেশে আমাদের জনশক্তি এবং সাধারণ জনগণের মাঝেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এই বক্তব্যের কারণে ইতোমধ্যে সংগঠনের ভাবমর্যাদা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটা দলীয় গঠনতন্ত্র, নীতি, আদর্শ, শৃঙ্খলা ও দায়িত্বশীল রাজনৈতিক আচরণের পরিপন্থী।'
এ কারণে জামায়াত আমিরের নির্দেশে শাহজাহান চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হচ্ছে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয় এবং আগামী সাত দিনের মধ্যে তাকে নোটিশের লিখিত জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, 'উল্লেখিত সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব না পাওয়া গেলে দলীয় গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'