পোস্টাল ব্যালটে গণভোটও দেবেন প্রবাসীরা
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজন করার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা পায়নি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্যও গণভোটের নিবন্ধন এবং ভোট প্রদান—দুটোই হবে সদ্য উদ্বোধন হওয়া 'পোস্টাল ভোট বিডি' অ্যাপের মাধ্যমে। এই গণভোটের জন্য আলাদা ব্যালট থাকবে। ডাকযোগেই ব্যালটটি ভোটারের কাছে যাবে। এতে খরচ বেশি বাড়বে না।'পোস্টাল ভোট বিডি' অ্যাপ উদ্বোধনের পর গত দুই দিনে বিশ্বের তিনটি অঞ্চল—পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকার ৩৭টি দেশে ব...
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজন করার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা পায়নি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্যও গণভোটের নিবন্ধন এবং ভোট প্রদান—দুটোই হবে সদ্য উদ্বোধন হওয়া 'পোস্টাল ভোট বিডি' অ্যাপের মাধ্যমে। এই গণভোটের জন্য আলাদা ব্যালট থাকবে। ডাকযোগেই ব্যালটটি ভোটারের কাছে যাবে। এতে খরচ বেশি বাড়বে না।
'পোস্টাল ভোট বিডি' অ্যাপ উদ্বোধনের পর গত দুই দিনে বিশ্বের তিনটি অঞ্চল—পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকার ৩৭টি দেশে বসবাসরত চার হাজারের বেশি বাংলাদেশি নাগরিক ভোটার হিসেবে নিবন্ধন করেছেন। এদের মধ্যে তিন হাজার ৯৮১ জন পুরুষ ও ২৬০ জন নারী।
তিন মাসে ইসি তার নিজস্ব জনবল দিয়েই এই অ্যাপটি তৈরি করেছে। এতে খরচ হয়েছে ৪৮ কোটি টাকা। গত বুধবার 'পোস্টাল ভোট বিডি' অ্যাপ উদ্বোধন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। এ সময় তিনি বলেন, বর্তমানে এক কোটি ৩০ লাখ বাংলাদেশি প্রবাসে বসবাস করছেন, যারা আগে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। এই উদ্যোগ তাদের সেই ভোটাধিকারের বঞ্চনা দূর করেছে এবং গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করেছে।
ইতোমধ্যে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটদানের জন্য নিবন্ধনের সময়সীমাও ঘোষণা করেছে ইসি। বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন কত ভোটার কোন অঞ্চল থেকে নিবন্ধন করছে সেটিও দেখানোর জন্য একটি পোর্টাল (https://portal.ocv.gov.bd/report) প্রস্তুত করা হয়েছে।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য গণভোটের নিবন্ধন কীভাবে হবে, জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ শনিবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, প্রবাসীদের কত নিবন্ধন হচ্ছে, তার লাইভ ডেটা আমরা প্রকাশ করছি পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে। এই অ্যাপের মাধ্যমেই প্রবাসীরা গণভোটের জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন। পরে ডাকযোগে আমরা ব্যালট পেপারটি পাঠিয়ে দেবো। অবশ্য গণভোট আয়োজন করার বিষয়ে আমরা সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো নির্দেশনা পাইনি। কমিশনও এ-সংক্রান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
ইসি জানিয়েছে, অ্যাপের মাধ্যমে প্রতি ব্যালটের খরচ পড়বে ৭০০ টাকা, গণভোটের কারণে ব্যালট সংখ্যা বাড়লে খরচ বাড়বে কি না জানতে চাইলে, ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, খুবই নমিনাল এটা। আমার মনে হয় না খরচটা বাড়বে।
পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে ভোটারের তথ্য কতটা সুরক্ষিত থাকবে জানতে চাইলে আলী নেওয়াজ বলেন, আমাদের সিস্টেমে এই ডেটা লিকের সম্ভাবনা কম। ভোটারদের কোনো তথ্য যেন লিক না হয়, সে জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।
গত ২১ আগস্ট 'আউট অব কান্ট্রি ভোটিং (ওসিভি) সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশ' (এসডিআই) শীর্ষক প্রকল্প নেয় ইসি। এই অ্যাপ তৈরিতে ইসির আইটি শাখার ১০ জন জনবল কাজ করেছেন। পাশাপাশি ২৮ জনের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছে ইসি।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ডেইলি স্টারকে বলেন, ওসিভি অ্যাপ তৈরির সময়ে গণভোট বিবেচনায় রাখা হয়নি। আইন পাস হলে নির্দেশনা পেয়ে প্রয়োজনীয় টেকনিকাল বিষয় বিবেচনা করে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।
ঘোষণাপত্রে সই না থাকলে পোস্টাল ব্যালটের ভোট 'বাতিল'
ভোট দিয়ে ঘোষণাপত্রে যথাযথ সই না থাকলে পোস্টাল ব্যালটের ভোট বাতিল করবে রিটার্নিং অফিসার। বৃহস্পতিবার পোস্টাল ভোটিং নিয়ে এক পরিপত্রে ইসি জানায়, রিটার্নিং অফিসার গণনার জন্য প্রাপ্ত খাম খুলে প্রথমেই ঘোষণাপত্রটি যথাযথভাবে সইযুক্ত কি না পরীক্ষা করবেন। সই না থাকলে, প্রাপ্ত ব্যালট পেপারের খাম না খুলেই ঘোষণাপত্রটি প্রত্যয়ন করে বিনষ্ট হিসেবে বাতিল করে পরে সংরক্ষণ করবেন তিনি।
প্রবাসী ভোটারের তথ্য যাচাই করে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মাধ্যমে তাদের বিদেশের ঠিকানায় পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হবে। রিটার্নিং অফিসার প্রতীক বরাদ্দ হলে ভোটাররা অ্যাপের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আসনের প্রার্থী তালিকা সম্পর্কে জেনে প্রাপ্ত পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেবেন। এরপর ভোটের ব্যালট ফিরতি খামে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার বরাবর ডাকযোগে পাঠাবেন। পোস্টাল ব্যালটে নিবন্ধিত ভোটার ব্যালট পেপার পাঠানোর অগ্রগতি অ্যাপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।